বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীর মেয়ে সামিরা তানজিন চৌধুরী জানিয়েছেন, তার বাবাকে মাহমুদুর রহমান নামে দাফন করা হয়নি।
তিনি বলেছেন, দৈনিক মানবজমিনে আব্বুর মৃত্যুকে নিয়ে যে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল সেখানেও এই ধরনের কোনও কথা উল্লেখ করা হয়নি। আমি আমার আব্বুকে মাহমুদুর রহমান বলে দাফন করিনি।
সোমবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক বিভাগে ডিএনএ নমুনা দেওয়া শেষে তিনি এ কথা বলেন।
সামিরা তানজিন চৌধুরী সাংবাদিকদের সামনে বলেন, আমার বাবা মরহুম আব্দুল হারিছ চৌধুরীর মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। বর্তমানে তার মরদেহ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। সিআইডির ফরেনসিক বিভাগ আমার রক্তের নমুনা নিয়েছে। গত ১৬ অক্টোবর আমার বাবার মরদেহ থেকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এখন আব্বুর ডিএনএ’র ম্যাপিং চলছে। আমার ডিএনএ নমুনার সঙ্গে আব্বুর ডিএনএ নমুনা মেলাবে।
তিনি বলেন, আমি বলেছি আমার বাবা মারা গেছে, কিন্তু গত সরকার এটা মেনে নেয়নি। তাহলে কি আমার বাবাকে আমি জীবিত রেখে দেবো? তা না হলে কাউকে আমার বাবাকে খুঁজে দিতে হবে! আমার বাবাতো নিরুদ্দেশ থাকতে পারেন না। কোনও ব্যক্তির মৃত্যু হলে এটার একটি সার্টিফিকেট লাগে। তার মৃত্যুর বিষয়টা তো প্রমাণিত হতে হবে।
তিনি বলেন, আমার আব্বুর মরদেহ আমি আমার দাদুর বাড়িতে নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। আমি দেখলাম গণমাধ্যম অহরহ রিপোর্ট করছে মাহমুদুর রহমান নামে হারিছ চৌধুরীর দাফন। এটা আসলে সঠিক নয়। আমার প্রশ্ন, কে মাহমুদুর রহমান নামে দাফন করেছে? আমি তো শুধু জানি আমি আমার বাবার মরদেহ নিয়ে গিয়েছি সেখানে দাফন হয়েছে। ওখানে যারা দাফন করেছেন তাদের সঙ্গে আমার কখনও কথা হয়নি। আমাকে বলা হয়েছিল– সেখানকার হুজুর মহিলা মানুষের সঙ্গে কথা বলেন না। আমি তখন সদ্য মৃত বাবার মরদেহ বুকে করে নিয়ে যাওয়া মেয়ে। সে সময় আমি তো কাউকে কিছু বলিনি।
আমি যখন সত্যি কথা বলি, তখন মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ভয় পেয়ে যায়। যাদের মাধ্যমে আব্বুর মরদেহ দাফন করা হয়েছিল, তখন তারা আমার কাছে সার্টিফিকেট চায়। এর মধ্যে মানবজমিনে এ বিষয়ে বিস্তারিত সংবাদ প্রকাশিত হয়ে যায়, যুক্ত করেন তিনি।
এক প্রশ্নের উত্তরে সামিরা তানজিন চৌধুরী বলেন, এর আগে ডিএনএ নমুনা দিতে বিড়ম্বনার জন্য আওয়ামী লীগ সরকার দায়ী। রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত প্রশাসন এর জন্য দায়ী। প্রতিহিংসামূলক রাজনীতি এবং স্বৈরাচারমূলক আচরণের কারণে আমাকে এই বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে।
এর আগে ঢাকা জেলার আদালতের নির্দেশে গত ১৬ অক্টোবর হারিছ চৌধুরীর লাশ উত্তোলন করে নমুনা সংগ্রহ করে সিআইডি। পরে আজ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে সিআইডিতে আসেন হারিছ চৌধুরীর মেয়ে সামিরা তানজিন চৌধুরী। আদালতের নির্দেশে তিনি সিআইডিতে ডিএনএ টেস্টের জন্য নমুনা দেন।