বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, দেশে ফেরার পর শেখ হাসিনাকে অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। তার মেয়াদে হত্যাকাণ্ডসহ বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ের হত্যাকাণ্ডের জন্য।
শুক্রবার (১০ আগস্ট) রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নাহিদ এমন মন্তব্য করেন।
উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, শেখ হাসিনা কেন বাংলাদেশ থেকে পালালেন তা জানতে আমি উৎসুক। শেখ হাসিনার সময়ে যেসব হত্যাকাণ্ড হয়েছে, আমরা সেসবের বিচার চাইবো। এটা আমাদের অন্যতম দাবি। যদি তিনি ফিরে না আসেন, তাহলে আমরা সে বিষয়ে কাজ করবো।
নাহিদ বলেন, আমরা তাকে গ্রেপ্তার করতে চাই। এটি নিয়মিত বিচার ব্যবস্থার মাধ্যমে বা একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে কাজ করবে কি না, আমরা এই বিষয়ে কীভাবে এগিয়ে যেতে হবে তা নিয়ে আলোচনা করছি।
তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার ছিল একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং আগের সরকারের সন্দেহভাজন দুর্নীতির তদন্ত করা। বাংলাদেশের যেকোনো নির্বাচনের আগে নির্বাচনী ও সাংবিধানিক সংস্কার প্রয়োজন, তাই পরবর্তী ভোট কবে হবে তা স্পষ্ট নয়।
একদিন প্রধানমন্ত্রী হতে চান কিনা জানতে চাইলে নাহিদ বলেন, আমি পরবর্তীতে কী হব তা বাংলাদেশের জনগণের উপর নির্ভর করবে।
ভারত হাসিনার আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেছে, কিন্তু বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে নয় মন্তব্য করে নাহিদ বলেন, আমরা ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চাই। ভারতেরও তার পররাষ্ট্রনীতির দিকে নজর দেওয়া দরকার, অন্যথায় এটি সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার জন্য সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে।
আরেক ছাত্র নেতা আবু বকের মজুমদার আলাদাভাবে রয়টার্সকে বলেছেন, আমরা চাই শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসুক ও বিচারের সম্মুখীন হোক।
উল্লেখ্য, জুনের মাঝামাঝি সময়ে সরকারি চাকরিতে থাকা কোটা নিয়ে আন্দোলন শুরু হয়। কিন্তু শেখ হাসিনার সরকার এই আন্দোলন দমনে শিক্ষার্থীদের উপর নির্যাতন ও নিপীড়ন শুরু করে। গত ১৭ জুলাই রংপুরে আবু সাঈদসহ ছয়জন শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ নিহত হন। এরপর এটি সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয়। সাধারণ মানুষের ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে গত সোমবার (৫ আগস্ট) শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন।