দীর্ঘ তিন মাস পর দুবাই থেকে দেশে এলো প্রবাসী মিন্টু হোসেন (৪৩) এর মরদেহ। শুক্রবার তার মরদেহ দেশের বাড়ি নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের এনায়েতপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামে আনা হয়। এরপর সন্ধ্যা ৭টায় বাদ মাগরিব নামাজ শেষে জানাজার পর পারিবারিক কবরস্থানে বাবার কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হন মিন্টু। প্রবাসী মিন্টু এনায়েতপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত জামাল জোয়াদারের ছেলে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে স্ট্রোক করে দুবাইয়ে একটি হাসপাতালে মারা যান তিনি। অর্থের অভাবে ওই সময় পরিবারের লোকজন মিন্টুর মরদেহ দুবাই থেকে দেশের বাড়িতে আনতে পারেনি। এরপর মিন্টুর মরদেহ দেশে আনতে আকুতি জানান তার পরিবার। কয়েকজন প্রবাসী ও দেশের কিছু বিত্তবান ও হƒদয়বান ব্যক্তিদের সহযোগীতায় এবং ঋন করে মিন্টুর মরদেহ বাড়িতে আনা হয়।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মিন্টু দেশে পেশায় একজন মেকানিক ছিলেন। তার ও তার পরিবারে অভাব-অনাটন যেন তার পিছু ছাড়ছিল না। পরিবারে স্বচ্ছলতা ফেরাতে মা, স্ত্রী ও দু’টি কণ্যা সন্তান রেখে অর্থ উপার্জনের জন্য ঋন করে বাংলাদেশ থেকে একটি কোম্পানির ভিসায় গত ২০২১ সালে পারি জমান দুবাইয়ে। বিদেশ গিয়েও যেন ভাগ্যের চাকা উল্টে যায় তার। কয়েক মাসের মাথায় ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ায় তিনি হয়ে যান অবৈধ প্রবাসী। অনেক চেষ্টার পরেও বৈধ প্রবাসী হতে পারেননি তিনি। এরপর থেকে দীর্ঘ তিন বছর গোপনে দুবাইয়ের বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতেন। এতে করে তার ঋন পরিশোধ তো দুরের কথা নিজের খাওয়া-পড়াও জোটাতে হিমসিম খাচ্ছিলেন মিন্টু। এরই মধ্যে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে স্ট্রোক করে দুবাইয়ে একটি হাসপাতালে মারা যান তিনি।
মিন্টুর স্ত্রী পারভীন বেগম জানান, কয়েকজন প্রবাসী ও দেশের কিছু বিত্তবান ব্যক্তিদের সহযোগীতায় এবং ঋন করে স্বামীর মরদেহ বাড়িতে আনি। শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় বাদ মাগরিব শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে। প্রবাসী মিন্টুর মরদেহ দেশে ফেরাতে যারা সহযোগীতা করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তার পরিবার।