জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহর গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। ১০ থেকে ১২ জন সন্ত্রাসী গাজীপুর এলাকায় এ হামলা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর আগেও একাধিকবার হাসনাত আব্দুল্লাহর গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। ফলে কে বা কারা এ হামলা চালিয়েছে তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
রবিবার (৪ মে) সন্ধ্যায় এ হামলা হয় বলে জানান এনসিপির নেতারা। হাসনাত আব্দুল্লাহর ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে ও আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে এনসিপির নেতাকর্মীরা। বোর্ড বাজার, চান্দনা চৌরাস্তায় আয়োজিত আলাদা বিক্ষোভ মিছিল গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এসময় দলটির নেতারা হাসনাত আব্দুল্লাহর উপর সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে দায়ীদের বিচার দাবির পাশাপাশি আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি করেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রবিবার সন্ধ্যায় বাসন থানার বাসন সড়ক এলাকায় এনসিপির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ গাড়িতে ১০ থেকে ১২ জন সন্ত্রাসী হামলা চালায়। এতে গাড়ির গ্লাস ভেঙে যায়, হাসনাতের হাত রক্তাক্ত হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পরে হাসনাত আব্দুল্লাহ তার গাড়ি নিয়ে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির সামনে কিছু সময় অতিবাহিত করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন।
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘হাসনাতের গাড়িতে ১০ থেকে ১২ জন সন্ত্রাসী গাজীপুর এলাকায় হামলা করেছে। গাড়ির গ্লাস ভেঙে গিয়েছে, হাত রক্তাক্ত হয়েছে। আশেপাশে যারা আছেন হাসনাতকে প্রটেক্ট করুন। লোকেশন দিচ্ছি।’
এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ তার পোস্টে লিখেছেন, ‘গাজীপুরের চান্দনায় হাসনাত আবদুল্লাহর গাড়িতে হামলা হয়েছে। আশেপাশে যারা আছেন, দ্রুত এগিয়ে আসেন, প্লিজ।’
এনসিপির গাজীপুরের যুগ্ম আহ্বায়ক আকাশ ঘোষ বলেন, ‘হাসনাত কোথায় গিয়েছিলেন বা কেন এসেছিলেন তা নিয়ে কোনো তথ্য আমাদের কাছে ছিল না। হামলার পর আমাদের কাছে একটা কল আসছে, তিনি হামলার শিকার হয়েছেন। তখন আমরাও শুনেছি।’
দলটির এই নেতা আরও বলেন, ‘আমাদের একটি টিম (ছাত্রদের) ঘটনাস্থলে গিয়েছে। তারা আসলে বিস্তারিত জানাতে পারব।’
এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, ‘গাজীপুর থেকে ফেরার সময় সন্ধ্যা ৭টার দিকে হাসনাত আবদুল্লাহর উপর সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে। ১০-১২টি বাইকে ধাওয়া করে তার গাড়িতে হামলা করা হয়। এতে গাড়ির গ্লাস ভেঙে তার শরীরেও আঘাত লাগে।’
এ ঘটনায় আওয়ামী লীগকে ইঙ্গিত করে আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, ‘অভ্যুত্থানের মূল নেতৃত্বের ওপর সন্ত্রাসীদের এরকম হামলা উদ্বেগজনক এবং ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের এখনো বিচারের আওতায় না আনায় এ ধরনের ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে।’
এদিকে, ঠিক কী কারণে হাসনাত আব্দুল্লাহ গাজীপুরে গিয়েছিলেন তা বলতে পারেনি স্থানীয় এনসিপির নেতাকর্মীরা। এ বিষয়ে রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির কার্যালয়ে রাতেই ব্রিফ করবে দলটি।
এ ব্যাপারে গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার রবিউল ইসলাম বলেন, হাসনাত আব্দুল্লাহর ওপর হামলার ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে দেখছি। জড়িতদের ধরতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ শুরু করেছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৭ ও ২৮ নভেম্বর রাজধানীর গুলিস্তান ও মাতুয়াইলে হাসনাতের গাড়িকে চাপা দেওয়ার চেষ্টা হয়।