নারায়ণগঞ্জের আদমজী ইপিজেডে অবস্থিত অনন্ত গ্রুপের একটি পোশাক কারখানার ২ হাজার ৪০০ শ্রমিককে নির্যাতন ও বকেয়া পরিশোধ না করেই ও দেড়শ’ শ্রমিককে ছাঁটাইয়ের অভিযোগ তুলেছে ঐ কারখানার শ্রমিকরা।
গত বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ দাবি করেন আমদজীর ওই পোশাক কারখানার বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। আদমজী ইপিজেড (ডিএনভি) থেকে বিনা বেতনে দেড়শ জন শ্রমিককে ছাঁটাই ও ২৪০০ শ্রমিকের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে ওই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে শ্রমিকরা বলেন, গতকাল ১৩ ফ্রেব্রুয়ারি শ্রমিকরা অফিসে যাওয়ার পর তাদেরকে অফিসের ভেতরে রেখে দরজা আটকে নারী-পুরুষসহ ২৪০০ শ্রমিককে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং পুলিশ দ্বারা নির্যাতনের পর দেড়শ’ শ্রমিককে বেআইনিভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
মানববন্ধনে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বর্তমানে সারাদেশে শ্রমিকদেরকে যেভাবে নির্যাতন, অত্যাচার চলছে এবং অন্যায়ভাবে ছাঁটাই করা হচ্ছে, তা আপনারা তাদের মুখ থেকে শুনছেন, দেখতে পাচ্ছেন। মাসের পর মাস বেতন আটকে রেখে যারা অন্যায় অবিচার করছে তাদের প্রতি ধিক্কার জানাই। এইসব কাজ আসলে কোম্পানির মালিকদের চক্রান্ত। বেতন বাড়ানোর ভয়ে পুরনোদের ছাঁটাই করে কম খরচে নতুন শ্রমিক নেওয়ার এই চক্রান্ত মানুষ এখন বোঝে। নির্যাতিত শ্রমিদের পাওনা বেতন ও তাদেরকে চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আমি প্রতিষ্ঠানে দায়িত্বপ্রাপ্তদের অনুরোধ জানাচ্ছি।
মানববন্ধনে আসা ঝর্না আক্তার সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, আমি অফিসে যাওয়ার পরে স্যারেরা দরজা আটকে রেখে আমার আইডি কার্ড কেড়ে নেয়। তারপরে এক স্যার বলেন এদেরকে মার্, পরে কী হয় তা আমি দেখবো। তিনি আরও বলেন, ‘আমার চুলের মুঠি ধরে ফ্লোরে ফেলে মেরেছে। আমি এর সুষ্ঠ বিচার চাই।
নির্যাতিত নারীকর্মী নাছিমা আক্তার বলেন, ‘আমাদেরকে কোম্পানির জিএম, আরএমসহ স্যারেরা পুলিশের সামনে জোর করে আমাদের থেকে রিজাইন লেটারে স্বাক্ষর নিতে চাইলে আমরা রাজি না হওয়ায় আমাদের অ্যাডমিন মোস্তফা স্যার, পুলিশ ও অন্যান্যরা মিলে আমাদের চুলের মুঠি ধরে মারধর করে। এ সময় জিএম স্যার নিজের হাতে আমার কবজি চেপে ধরে আমাকে পিটিয়েছে ।
নারী শ্রমিক শম্পা বলেন, ‘আমাদেরকে কোনও নোটিশ দেওয়া হয় নাই। হঠাৎ রুমের ভেতরে জোর করে রিজাইন লেটার হাতে ধরিয়ে দেয় কিন্তু আমরা তাতে সই নেই নাই। এরপর তারা আমাদের ওপর চড়াও হয়। যদি আমাদেরকে অফিসের নিয়মতান্ত্রিকভাবে পাওনা বেতন পরিশোধ করে এবং অন্যান্য নিয়ম মেনে বহিষ্কার করতো তাহলে আমরা মেনে নিতাম।’
এ সময় তারা শ্রমিকদের নির্যাতন ও বহিষ্কারের সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন। মানববন্ধনে প্রায় ৮ থেকে ৯ শ’ শ্রমিক উপস্থিত ছিলেন।